দুর্নীতিবাজ কমিশনারদের অপসারণের দাবিতে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

দুর্নীতিবাজ কমিশনারদের অপসারণের দাবিতে ব্যবসায়ীদের বিক্ষোভ

 

আমদানিকৃত লাইট-ফিটিংস পণ্য খালাসে অতিরিক্ত শুল্কায়ণের কারণে আইসিডি কমলাপুরের অসৎ কর্মকর্তাদের অপসারণ দাবি করে বিক্ষোভ করেছেন এ খাতের ব্যবসায়ীরা। 



বৃহস্পতিবার (৮ আগস্ট) দুপুরে রাজধানীর কমলাপুর আইসিডি কার্যালয়ের সামনে প্রায় শতাধিক লাইট-ফিটিংস আমদানিকারক ব্যবসায়ী জড়ো হয়ে প্লাকার্ড হাতে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন। 


এ সময় বাংলাদেশ ইলেকট্রিক এ্যাসোসিয়েশনের সিনিয়র সহসভাপতি সাদেকুর রহমান সাজু ও ভাইস চেয়ারম্যান মোহাম্মদ ইউনুস কামালসহ উপস্থিত ব্যবসায়ীরা বক্তব্য দেন।


তারা বলেন, চায়না থেকে আমদানিকৃত লাইট- ফিটিংস পণ্য গত তিন বছর যাবত প্রতিকেজি ৩ ডলার করে শুল্কায়ণ করা হচ্ছে। কিন্তু গত ১ জুন হতে বর্তমান আইসিডির দুর্নীতিবাজ ও একরোখা কমিশনার মোহাম্মদ আকবর হোসেন ও এডিশনাল কমিশনার আসাদুজ্জামান ব্যবসয়াীদের ওপর ৭ ডলারে মাল শুল্কায়ণের চাপ প্রয়োগ করে। বর্তমান শুল্কায়ণের চেয়ে বর্ধিত এ হার প্রায় ১৩৩ শতাংশ বেশি। এতে প্রতিকেজিতে ব্যবসায়ীদের ৬০৭ টাকা বেশি গুনতে হবে, যা কোনভাবেই যুক্তিযুক্ত নয়। 



এ ছাড়া বর্তমানে ৩ ডলারে লাইট-ফিটিংস পণ্য বাজারে প্রচুর মজুদ রয়েছে। ব্যবসায়ীরা কমিশনারদের  বাজার যাচাইয়ের অনুরোধ করলে ৫ কার্যদিবস সময় চেয়ে ১ মাস অতিবাহিত করে ৭ ডলারে মাল শুল্কায়ণের জন্য প্রভাব বিস্তার করে। শুধু তাই নয়, বাজার যাচাইয়ের রিপোর্ট দেখাতেও অস্বীকৃতি জানান কর্মকর্তারা। ডকুমেন্টস এসেসমেন্ট শেষ করে শুধু ট্যাক্সের অঙ্ক আমদানি কারককে দেয়া হয়, এসেসমেন্ট পেপার দিতে অস্বীকৃতি জানায়। শুধুমাত্র ওনাদের ৭ ডলারকৃত শুল্কায়ণের টাকা জমা দেয়ার পর ডকুমেন্টস আমদানিকারককে দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। এ অবস্থায় কিছু অসহায় আমদানিকারক কমিশনারদের চাপের মুখে ডকুমেন্টস খালাস করে। ব্যবসায়ীরার এ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানায় এবং যে অন্যায় হয়েছে তা পুন:শুলকায়ণের মাধ্যমে (৩ ডলার প্রতিকেজি) অতিরিক্ত টাকা ফেরত দেওয়ার অনুরোধ জানানো হচ্ছে। 


লাইট-ফিটিংস ব্যবসায়ীরা লিখিত বক্তব্যে আরও জানান, এনবিআর চেয়ারম্যান কর্তৃক হয়রানি বন্ধ করতে হবে। এইচএস কোড হয়রানি ও ২৫০ থেকে ৩০০ শতাংশ জরিমানা আইন বাতিল, হয়রানিমুক্ত ব্যবসায়িক পরিবেশ সৃষ্টি  এবং যেসব পণ্য এখনো খালাস হয়নি তা পূর্বের ন্যায় ৩ ডলারে খালাস করার সুযোগ দিতে হবে। শুধু তাই নয়, গত ২৬ মে থেকে অদ্যবধি ২ মাস আমদানিকৃত লাইট-ফিটিংস পণ্য ডেলিভারি হচ্ছে না। সেক্ষেত্রে আমদানিকারক পোর্ট শিপিং ডেমারেজ বহন করছে। এছাড়া কমলাপুর আইসিডিতে ৩০ কন্টেইনার মাল শুল্কায়ণ জটিলতায় আটকে আছে। এতে প্রায় ৩ কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। ব্যবসা ক্ষতিগ্রস্ত হলে ব্যবসায়ীরা নি:স্ব হয়ে পড়বেন।


সাদেকুর রহমান সাজু বলেন, আইসিডি কমলাপুরের অসৎ কর্মকর্তাদের কারণে এ খাতের ব্যবসায়ীরা প্রতিনিয়ত হয়রানির স্বীকার হচ্ছেন। একদিকে অতিরিক্ত শুল্কায়ণ অন্যদিকে ঘুষ ছাড়া আইসিডি থেকে পণ্য খালাস করা যায় না। ব্যবসায়ীদের মুনাফা খেয়ে ফেলছেন কর্মকর্তারা। এসব অসৎ কর্মকর্তাদের কারণে ব্যবসায়ীরা লোকসান করছেন। কেউ কেউ ইতোমধ্যে ব্যবসা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এ ব্যাপারে আমরা আগেও প্রতিবাদ করেছি, কিন্তু কাজ হয়নি। এখন দেশে অন্তবর্তীকালীন সরকার আসছে। আশা করব, দ্রুত এসব অসৎ কর্মকর্তাদের অপসারণের উদ্যোগ নেওয়া হবে। 


তিনি জানান, সরকারি নির্দেশনা না থাকার পরও অনৈতিকভাবে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে ৪ ডলার বেশি নিয়ে নিজেদের পকেট ভারি করছে। চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে গত ১ মাস ৮ দিনের ডেমারেজ চার্জ মওকুফ করতে হবে। লাইট-ফিটিংস আমদানিকারক ব্যবসায়ীদের এই দাবির সমর্থন দিয়েছেন বাংলাদেশ ইলেকট্রিক এ্যাসোসিয়েশনের ব্যবসায়ী ও সম্মিলিত ব্যবসায়ী পরিষদ (এফবিসিসিআই)। 

কোন মন্তব্য নেই