যুক্তরাষ্ট্রে প্রত্যাশার চেয়ে কমেছে খুচরা বিক্রি
যুক্তরাষ্ট্রে খুচরা বিক্রির পরিমাণ উল্লেখযোগ্য পরিমাণে কমেছে। গত ডিসেম্বরে এ হার ১২ মাসের সর্বনিম্নে ছিল। মূলত গাড়িসহ অন্য নিত্যপণ্য বিক্রি কমে যাওয়ার কারণে এ পতন সৃষ্টি হয়েছে। ফলে ২০২৩ সালেও অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি দুর্বল হবে বলেই শঙ্কা করা হচ্ছে।
ডিসেম্বরে টানা দ্বিতীয় মাসের মতো খুচরা বিক্রি খাতে নিম্নগতি দেখা গেছে। এর মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের পণ্য, যা কারখানার উৎপাদনও কমিয়ে দিচ্ছে। দুই বছরের মধ্যে ডিসেম্বরেই উৎপাদন খাতে সবচেয়ে বড় পতন রেকর্ড করা হয়েছে। অর্থনীতিবিদরা এমনটা প্রত্যাশা করেননি।
নর্থ ক্যারোলাইনার এলপিএল ফাইন্যান্সিয়ালের মুখ্য অর্থনীতিবিদ জেফরি রচ বলেন, অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তার এ সময়ে ভোক্তারাও খরচ কমাচ্ছেন। ডিসেম্বরের খুচরা বিক্রি খাতের তথ্য সে ইঙ্গিতই দিচ্ছে। মার্কিন অর্থনীতির গতিপথ ক্রমেই দুর্বল হচ্ছে এবং ২০২৩ সালের জন্য মন্দার ঝুঁকি তৈরি হচ্ছে।
ডিসেম্বরে খুচরা বিক্রি কমেছে ১ দশমিক ১ শতাংশ, নভেম্বরেও কমেছিল ১ শতাংশ। রয়টার্সের অর্থনীতিবিদরা আগের পূর্বাভাসে বলেছিলেন পতনের এ হার শূন্য দশমিক ৮ শতাংশ হতে পারে। যদিও খুচরা বিক্রি গত বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ৬ শতাংশ।
ডিসেম্বরে খুচরা বিক্রিতে পতনের কারণ মূলত বিভিন্ন পণ্যের দাম কমে যাওয়া। মূল্যস্ফীতির কারণে সাধারণ মানুষের জীবনে যে পরিবর্তন এসেছিল, তা পূরণে উৎসব মৌসুমের বিক্রির সময় এগিয়ে অক্টোবরে নেয়া হয়েছিল। যেন বিভিন্ন ছাড়ের সুবিধা নিয়ে ভোক্তারা কেনাকাটা করতে পারেন।
যেহেতু ফেডারেল রিজার্ভ মূল্যস্ফীতির সঙ্গে লড়াই করছে, তাই ঋণের সুদহার বাড়িয়ে দেয়া হয়েছে, যা খুচরা বিক্রির ওপর এক ধরনের চাপ সৃষ্টি করেছে। ডিসেম্বরের তীব্র ঠাণ্ডা রেস্তোরাঁ ও বারের ব্যবসায় মন্দা সৃষ্টি করেছিল। অন্যদিকে গ্যাসোলিনের দাম কমে যাওয়া সার্ভিস স্টেশনগুলোর ওপর প্রভাব রেখেছিল।
গাড়ি ডিলারদের বিক্রিতে পতনের হার ১ দশমিক ২ শতাংশ। সার্ভিস স্টেশনে লেনদেন কমেছে ৪ দশমিক ৬ শতাংশ। অনলাইনে খুচরা বিক্রি কমেছে ১ দশমিক ১ শতাংশ, আসবাবপত্রের দোকানে বিক্রি কমেছে ২ দশমিক ৫ শতাংশ। ইলেকট্রনিকস ও গৃহস্থালি পণ্যের দোকানে বিক্রি কমেছে ১ দশমিক ১ শতাংশ, পোশাকের দোকানের ক্ষেত্রে এ হার শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ। সাধারণ যন্ত্রাংশের দোকানেও কমেছে বিকিকিনি।
অন্যদিকে বিভিন্ন ধরনের খেলার সামগ্রী, শখ পূরণের বস্তু, সংগীতবিষয়ক যন্ত্রাংশ এবং বইয়ের দোকানে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ হারে বেড়েছে বিক্রি। এছাড়া ভবন নির্মাণের বিভিন্ন সামগ্রী এবং বাগান করা সংক্রান্ত ব্যবসায়ও প্রবৃদ্ধির হার শূন্য দশমিক ৩ শতাংশ।
গত মাসে অটোমোবাইল, পেট্রল, ভবন নির্মাণের সামগ্রী ও খাবার বাদে কোর খুচরা বিক্রির পতন হয়েছে শূন্য দশমিক ৭ শতাংশ। নভেম্বরের তথ্য বলছে, তথাকথিত কোর খুচরা বিক্রি আগের চেয়ে শূন্য দশমিক ২ শতাংশ কমেছে। কোর খুচরা বিক্রির সঙ্গে জিডিপির ভোক্তা ব্যয় গভীরভাবে সম্পর্কিত। তবে কোর ভোক্তা বিক্রির যে পতন তা পরিষেবা খাতের ব্যয়ের কারণে তেমন প্রকাশ্যে আসেনি।
কোন মন্তব্য নেই