ক্লাউড শিল্পে মাইক্রোসফটকে ছাড়ানোর পরিকল্পনা গুগলের
ক্লাউড শিল্পের অন্যতম দুই প্রতিদ্বন্দ্বী গুগল ক্লাউড ও মাইক্রোসফট অ্যাজুর। সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পিউটার তৈরিতে কিছুদিন আগেই প্রযুক্তি জায়ান্ট এনভিডিয়ার সঙ্গে যূথবদ্ধ হয়ে কাজের চুক্তি করে মাইক্রোসফট। বিপরীতে সার্চ জায়ান্ট গুগলও ক্লাউড পরিষেবা বাজার দখল করতে নেমেছে বেশ প্রস্তুতি নিয়েই। গুগলের অভ্যন্তরীণ অনুমানগুলো ইঙ্গিত দিচ্ছে অচিরেই ক্লাউড শিল্পে মাইক্রোসফটকে ছাড়িয়ে যাবে তারা। সম্প্রতি ফাঁস হওয়া এক তথ্যে প্রতিষ্ঠানটির এ ধরনের অনুমানের ইঙ্গিতই উঠে এসেছে। খবর টেক টাইমস।
এদিকে অ্যামাজন ওয়েব পরিষেবার আধিপত্য রোধ করতে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগও করেছে গুগল ও মাইক্রোসফট। সিএনবিসির প্রতিবেদন অনুযায়ী, গুগলের অভ্যন্তরীণ অনুমানমাফিক সংস্থাটি বিশ্বাস করে যে তারা বিশ্লেষকদের ধারণার চেয়ে দ্রুতই লক্ষ্যের দিকে অগ্রসর হচ্ছে এবং ক্লাউড পরিষেবায় দ্বিতীয় স্থানের কাছাকাছি অবস্থান করছে। যদিও গুগলের অনুমানটি একটি চুরি করা মাইক্রোসফট নথি ও বিভিন্ন বাজার পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে তৈরি করা। তবে গুগলের এ অনুমান ইঙ্গিত দেয় যে তারা ক্লাউড শিল্পে মাইক্রোসফটের উপরে নেতৃত্ব দিতে পারে।
কম্পিউটারবিষয়ক ম্যাগাজিন সিআরএন অনুসারে অ্যামাজন, মাইক্রোসফট ও গুগল সম্মিলিতভাবে যুক্তরাষ্ট্রের ক্লাউড পরিষেবার ৭৬ শতাংশ নিয়ন্ত্রণ করে এবং ক্রমেই তাদের অংশগ্রহণ বাড়ছে। এ তিন কোম্পানি বিশ্বব্যাপী মোট ক্লাউড অবকাঠামো বাবদ ব্যয় করে ৬৬ শতাংশ, খরচের পরিমাণ ২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে ৫ হাজার ৭০০ কোটি ডলার ছাড়িয়ে গেছে।
বিশ্বব্যাপী এন্টারপ্রাইজ ক্লাউড পরিষেবার বাজারের শীর্ষস্থানীয় অ্যামাজন ওয়েব পরিষেবা। যারা ২০২২ সালের তৃতীয় প্রান্তিকে বাজারের ৩৪ শতাংশ শেয়ার ধরে রেখেছে। এদিকে চলতি বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে বিশ্বব্যাপী ক্লাউড পরিষেবার বাজারের ২১ শতাংশ রয়েছে মাইক্রোসফটের দখলে, যেখানে গুগল ক্লাউডের শেয়ারের অংশ ১১ শতাংশ।
বিজনেস ইনসাইডারের মতে, মাইক্রোসফট তার ক্লাউড খাত থেকে গত অর্থবছরে ৭ হাজার ৫২০ কোটি ডলার রাজস্ব আয় করে। কিন্তু ইউনিট স্বল্পতার কারণে বাজারের শীর্ষস্থানীয় অ্যামাজন ওয়েব সার্ভিসের মতো প্রতিদ্বন্দ্বীদের তুলনায় আজ্যুরের সক্ষমতা মূল্যায়ন করা চ্যালেঞ্জিং। যদিও ২০২১ সালে তাদের রাজস্ব বাবদ আয়ের পরিমাণ ৬ হাজার ২২০ কোটি ডলার।
মাইক্রোসফটের ফাঁস হওয়া গোপন যে নথিটি গুগলের কাছে এসেছে, তাতে দেখা যায় ২০২২ অর্থবছরের আজ্যুরের পরিচালন খরচ বাবদ লোকসান প্রায় ৩ হাজার কোটি ডলার। যদিও তা আগের বছরের ৫ হাজার কোটি ডলার পরিমাণ লোকসান থেকে কম। এর অর্থ তাদের বিক্রয় ও বিপণন খরচ ১ হাজার কোটি ডলারের কাছাকাছি পৌঁছেছে, যা রাজস্ব ব্যয়ের ৩৪ শতাংশের জন্য দায়ী।
তাছাড়া ফাঁস হওয়া তথ্যানুসারে, সাম্প্রতিক অর্থবছরে ক্লাউড পরিষেবা থেকে ২ হাজার ৯০০ কোটি ডলারের কম আয় করেছে মাইক্রোসফট। অর্থবছরটি শেষ হয়েছে জুনে। চিত্রটি গ্রাহকদের ব্যবহূত ক্লাউড অবকাঠামো পরিষেবার মূল্যকে প্রতিফলিত করে।
বিদ্যমান পরিস্থিতি দুটি বৃহত্তম ক্লাউড পরিষেবা সংস্থা মাইক্রোসফট আজ্যুর ও গুগল ক্লাউডের বাজার দখলের অবারিত সম্ভাবনাকেই সামনে নিয়ে আসে। তাছাড়া গুগলের অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নসহ কোম্পানিটি বিশ্বাস করছে, তারা শিগরিই মাইক্রোসফটে সরিয়ে নিজেদের অবস্থান উন্নীত করতে সক্ষম হবে।
কোন মন্তব্য নেই