জাপানি প্রধানমন্ত্রীসহ ৬৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাশিয়ার পাল্টা নিষেধাজ্ঞা - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

জাপানি প্রধানমন্ত্রীসহ ৬৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে রাশিয়ার পাল্টা নিষেধাজ্ঞা


জাপানের প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ও আরও দুই মন্ত্রীসহ ৬৩ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে রাশিয়া। বুধবার (৪ মে) রুশ পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক বিবৃতিতে এ নিষেধাজ্ঞার ঘোষণা দেওয়া হয়।


ঘোষণায় বলা হয়, মস্কোর বিরুদ্ধে ‘অগ্রহণযোগ্য বক্তব্য’র কারণে তাদের বিরুদ্ধে এ নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হলো। নিষেধাজ্ঞার আওতায় জাপানি প্রধানমন্ত্রীসহ তালিকায় থাকা অন্য দুই মন্ত্রী ও কর্মকর্তাদের রাশিয়ায় ঢুকতে দেওয়া হবে না।


গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। এর প্রতিক্রিয়ায় দেশটির ওপর একের পর এক নিষেধাজ্ঞা আরোপ অব্যাহত রেখেছে পশ্চিমা বিশ্ব। নিষেধাজ্ঞার এ মচ্ছবে 

অংশ নেয় মার্কিন মিত্র জাপানও।


গত দুই মাসে মস্কোর ওপর একাধিক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে দেশটি। রাশিয়া থেকে কয়লা আমদানি নিষিদ্ধ করেছে। শুধু তাই নয়, রাশিয়ার আট কূটনীতিককেও বহিষ্কার করে টোকিও।



এছাড়া রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের কন্যা ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভের স্ত্রী-কন্যাসহ ৩৯৮ জন রুশ নাগরিককে নিষেধাজ্ঞার তালিকায় ফেলেছে জাপান।


সে সময় দেশটির প্রধানমন্ত্রী কিশিদা বলেছিলেন, ‘রাশিয়া বারবার বেসামরিক মানুষ হত্যা ও পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্রে হামলা চালিয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করেছে। এ যুদ্ধাপরাধের কোনো ক্ষমা হয় না।’ তারই পাল্টা পদক্ষেপ হিসেবে এবার জাপানের প্রধানমন্ত্রীসহ ৬৩ ব্যক্তির ওপর নিষেধাজ্ঞা দিল মস্কো।


এদিকে খারকিভে ব্যাপক গোলাবর্ষণের পর এবার ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলীয় শহর দোনেৎস্কে অভিযান আরও জোরালো করেছে রাশিয়া। শহরটিতে একদিনেই রুশ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ২১ বেসামরিক নাগরিক নিহতের খবর জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।


এদিকে রাশিয়া অস্ত্রবিরতি না করলে কোনো শান্তি চুক্তি করবে না বলে সাফ জানিয়েছে ইউক্রেন। অন্যদিকে মস্কোর ওপর আরও নিষেধাজ্ঞা জারির ঘোষণা দিয়েছে ইউরোপীয় কমিশন।




স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (০৩ মে) রাতে পোল্যান্ড সীমান্তবর্তী ইউক্রেনের লাভিভ শহরে দফায় দফায় ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালায় রাশিয়া। লক্ষ্যবস্তু ছিল শহরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। হামলার পর পুরো অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।


এদিন ইউক্রেনের পূর্বঞ্চলীয় শহর দোনেৎস্কেও রুশ হামলার খবর জানায় আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো। মঙ্গলবারের ওই হামলায় বেশ কয়েকজন হতাহত হয় বলেও দাবি করা হয়। কর্তৃপক্ষ জানায়, ইউরোপের অন্যতম বড় কোকাকোলার কারখানা ছাড়াও আরও ৪টি স্থাপনায় ওই হামলা চালানো হয়। এছাড়াও মধ্য ও পশ্চিম ইউক্রেনেও রুশ বাহিনীর অভিযান জোরদারের দাবি করেছে কিয়েভ।


রাশিয়া ইউক্রেনজুড়ে অভিযান অব্যাহত রাখলেও কিয়েভের দাবি, পুতিন বাহিনীকে ঠেকাতে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে গোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন ইউক্রেন সেনারা। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে ইউক্রেনের জাতীয় নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা বিভাগ জানায়, রাশিয়া যুদ্ধবিরতি ঘোষণা না দিলে দু'পক্ষের মধ্যে কোনো ধরনের শান্তি চুক্তি হবে না।


এর মধ্যেই নতুন এক ভিডিও বার্তায় ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি বলেন, রুশ বাহিনীর অব্যাহত হামলার মধ্যেই মারিওপোলের আজভস্তাল ইস্পাত কারখানার আশ্রয়শিবির থেকে দেড় শতাধিক বেসামরিক নাগরিককে নিরাপদে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।




জেলেনস্কির ভাষায়, ‘রুশ সেনারা মানবিক করিডোরের তোয়াক্কা না করেই আজভস্তাল ইস্পাত কারখানায় হামলা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা বারবার বলেছে ওই স্থাপনা থেকে একজনকেও নিরাপদে সরিয়ে নিতে দেবে না তারা। যদিও, এরইমধ্যে আমরা ১শ ৫৬ জনকে বের করে আনতে সক্ষম হয়েছি। এখনো যারা সেখানে আটকা পড়ে আছেন তাদের সরিয়ে নিতে সম্ভাব্য সবকিছুই করব আমরা।’


এদিকে রাশিয়া থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। এ বিষয়ে ইতোমধ্যে একটি প্রস্তাব সামনে এনেছে পশ্চিমা দেশগুলোর সংগঠনটি। শিগগিরই বিস্তারিত পরিকল্পনা প্রকাশ করা হবে বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম।


বুধবার ইউরোপীয় কমিশনের প্রেসিডেন্ট উরসুলা ভর ডার লিয়েন জানান, বুচা ও মারিওপোলে যুদ্ধাপরাধে জড়িতদের নিষিদ্ধ করা, রাশিয়ার সবচেয়ে বড় ব্যাংক সে’বার ব্যাংককে সুইফট থেকে বের করে দেওয়া, তিনটি রুশ সম্প্রচার মাধ্যমকে ইইউ থেকে বিচ্ছিন্ন করা এবং মস্কো থেকে তেল আমদানির ওপর নিষেধাজ্ঞার বিষয়ে শিগগিরই আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেওয়া হবে। যদিও মস্কো থেকে তেল আমদানি নিষিদ্ধের সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করেছে হাঙ্গেরি।


কোন মন্তব্য নেই