খুলনায় কোরবানির পশুর ঘাটতি ২৭ হাজার
আসন্ন কোরবানির ঈদে খুলনা জেলাব্যাপী পশুর চাহিদা ৭৫ হাজার। আর কোরবানির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে ৪৭ হাজার ৭৮৯টি পশু। ঘাটতি ২৭ হাজার ২১১টি পশু। তবে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর বলছে, দুশ্চিন্তার কারণ নেই, কোরবানিতে পশুর ঘাটতি মিটবে আশপাশের জেলাগুলো থেকে। খুলনার প্রধান জোড়াগেট পশুর হাট আগামী ১৫ জুলাই থেকে শুরু হওয়ার কথা রয়েছে।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর ও খামারি সূত্রে জানা গেছে, দেশে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের পরে দ্বিতীয় বারের মতো পালিত হতে যাচ্ছে ঈদুল আজহা বা কোরবানির ঈদ। গেল বছর খুলনা জেলায় পশু কোরবানি হয়েছিল ৭৪ হাজার। আসন্ন কোরবানিকে সামনে রেখে জেলার সদর, ডুমুরিয়া, ফুলতলা, রূপসা, দিঘলিয়া, তেরখাদা, কয়রা, দাকোপ, পাইকগাছাসহ প্রায় সব উপজেলার ৫ হাজার ২১২ জন খামারি বছর জুড়ে লালন-পালন করেছেন ৪৭ হাজার ৭৮৯টি পশু। এসব পশুর মধ্যে রয়েছে ২৮ হাজার ৫৬৮টি ষাঁড়, ২ হাজার ৩১৯টি বলদ, ২ হাজার ৪০৪টি গাভি, ৯টি মহিষ, ১২ হাজার ২৩৯টি ছাগল এবং ২ হাজার ২৫০টি ভেড়া। কোরবানির জন্য এসব পশু বিক্রির উদ্দেশ্যে হাটে তোলা হবে।
এ দিকে দেশব্যাপী চলা কঠোর লকডাউনের মেয়াদ দ্বিতীয় দফায় বৃদ্ধি পাওয়ায় পশু নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন খামারিরা। শেষ পর্যন্ত পশু বিক্রি করার সুযোগ পাবেন কিনা বা পশুর ন্যায্যমূল্য পাবেন কিনা- এমন আশঙ্কার দোলাচলে রয়েছেন তারা। তার ওপর মৌসুমি ব্যবসায়ীদের ভারতীয় পশুর উৎপাত তো রয়েছেই।
ডুমুরিয়া উপজেলার বামনদিয়া গ্রামের খামারি আফসার শেখ বলেন, চলতি বছর খড়, ভূষি, ঝোলাগুড় সবকিছুর দাম কেজি
প্রতি ৪/৫ টাকা করে বেশি। তারপরও বছর জুড়ে ৫টি ষাঁড়ের যত্ন নিয়েছি। ওষুধ না দিয়ে খাবারের উপরেই আস্থা রেখেছি। হাটে নেওয়ার জন্য প্রস্তুতিও আছে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত পশুর হাট বসবে কিনা, দাম পাব কিনা- সেই আশঙ্কায় দিন কাটছে।
খুলনা সিটি করপোরেশন পরিচালিত জোড়াগেট পশুর হাট কমিটির আহ্বায়ক কাউন্সিলর শামসুজ্জামান মিয়া স্বপন বলেন, স্থায়ীয় উৎপাদন অনুযায়ী খুলনায় কোরবানির পশুর ঘাটতি রয়েছে। অন্যবারও আশপাশের জেলার পশু দিয়ে এই ঘাটতি পূরণ হয়। তবে এবার লকডাউনের কারণে কী পরিমাণ পশু হাটে আনা সম্ভব হয়, সেটা দেখার বিষয়। তবে হাটে সরবরাহ কম হলে পশুর দাম বাড়তে পারে।
খুলনার ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা রণজিতা চক্রবর্তী বলেন, গত বছর জেলায় ৭৪ হাজার পশু কোরবানি হয়েছিল। করোনার কারণে চলতি বছর জেলায় পশুর চাহিদা ২০/২৫ ভাগ কমতে পারে। তারপরও লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৭৫ হাজার। মহানগরীর জোড়াগেট পশুর হাটসহ জেলায় অন্তত ২৫/২৬টি হাট বসবে। সেখানে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো থেকে পশু আসবে। তখন কোরবানির জন্য পশুর সংকট থাকবে না। তিনি আরও বলেন, কোরবানির পশু যাতে রোগাক্রান্ত না হয় এজন্য হাটে মেডিক্যাল টিম কাজ করবে। হাটে যে পশুই আসুক সেটাকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখা হবে।
কোন মন্তব্য নেই