রামেক হাসপাতালে মৃত্যু ৫০০ ছাড়াল

জুলাই মাসের চলতি ২৭ দিনেই রাজশাহী মেডিকেল (কলেজ) হাসপাতালে ৫০০ ছাড়িয়েছে করোনা সংক্রমণ ও মৃত্যু। গত ২৪ ঘণ্টায় মারা গেছেন ২১ জন।

১ জুলাই থেকে ২৭ জুলাই পর্যন্ত প্রাণহানি দাঁড়াল ৫০৫ জনে। করোনা ধরা পড়ার পর গত বছরের মে থেকে এ পর্যন্ত এক মাসে রামেক হাসপাতালে সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড এটি।

এদিকে করোনায় ১৬১ জন এবং উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন ৩০৯ জন। বাকি ৩৫ জন করোনা নেগেটিভ হয়েও অন্যান্য শারীরিক জটিলতায় মারা গেছেন। এর আগে গত জুনে হাসপাতালে মৃত্যু পৌঁছায় চূঁড়ায়। এই মাসে মারা গেছেন ৪০৫জন। এর মধ্যে করোনায় মারা গেছেন ১৮৯  জন। 

গত বছরের এপ্রিল থেকে এই বছরের জুন পর্যন্ত রামেক হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৭ হাজার ১৬১ জন রোগী। এর মধ্যে সুস্থ হয়ে হাসপাতাল ছেড়ে গেছেন ৫ হাজার ৯২৭ জন। এই ১৪ মাসে মারা গেছেন ১ হাজার ৭৮ জন। এর মধ্যে করোনায় মৃত্যু হয়েছে ৩৪৬ জনের। অন্যদের মৃত্যু হয়েছে উপসর্গ নয়তো অন্যান্য শারীরিক জটিলতায়।

সোমবার (২৬ জুলাই) সকাল ৯টা থেকে মঙ্গলবার (২৭ জুলাই) সকাল ৯টার মধ্যে হাসপাতালের করোনা আইসোলেশন ইউনিটে যে ২১ জন মারা গেছেন তাদের মধ্যে করোনায় মারা গেছেন ১০ জন। বাকি ১১ জনের মৃত্যু হয়েছে করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে।

রামেক হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শামীম ইয়াজদানী এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, গত ২৪ ঘন্টায় রাজশাহীর ৭ জন, পাবনার ৫ জন, নওগাঁর ৪ জন, নাটোরের তিনজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন, এবং ঝিনাইদহের একজন মারা গেছেন।

এই একদিনে রাজশাহীর তিনজন, নাটোরের দুজন, নওগাঁর দুজন, পাবনার দুজন এবং ঝিনাইদহের একজন করে মোট ১০ জন মারা গেছেন করোনা সংক্রমণে। এ ছাড়া করোনা সংক্রমণের উপসর্গ নিয়ে মারা গেছেন রাজশাহীর ৪ জন, পাবনার তিনজন, নওগাঁর দুজন, চাঁপাইনবাবগঞ্জের একজন এবং নাটোরের একজনসহ মোট ১১ জন।

গত ২৪ ঘণ্টায় ১১ জন পুরুষ এবং ১০ জন নারী প্রাণ হারিয়েছেন করোনা ইউনিটে। যাদের ১১ জনের বয়স ৬১ বছরের উপরে। এছাড়া  ৫১ থেকে ৬০ বছরের মধ্যে ৩ জন, ৪১ থেকে ৫০ বছরের মধ্যে ৩ জন এবং ৩১ থেকে ৪০ বছরের মধ্যে ৪ জন মারা গেছেন। স্বাস্থ্যবিধি মেনে মরদেহ দাফনের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

পরিচালক আরও জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় সর্বোচ্চ তিনজন করে মারা গেছেন হাসপাতালের ১৭, ২২ এবং ২৯/৩০ নম্বর ওয়ার্ডে। এ ছাড়া নিবীড় পরিচর্যাকেন্দ্র (আইসিইউ), ৩, ১৪ ও ১৬ নম্বর ওয়ার্ডে দুজন করে এবং কেবিন, ১, ৪ ও ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে একজন করে মারা গেছেন।

মঙ্গলবার সকাল ৯টা পর্যন্ত ৫১৩ শয্যার রামেক করোনা আইসোলেশন ইউনিটে রোগী ভর্তি ছিলেন ৩৯৯ জন। ২০ শয্যার আইসিইউতে ভর্তি ছিলেন ২০ জন। করোনা নিয়ে এ পর্যন্ত ভর্তি রয়েছেন ১৭৮ জন।

এ ছাড়া উপসর্গ নিয়ে ভর্তি রয়েছেন ১৭৭ জন। করোনা ধরা পড়েনি হাসপাতালে ভর্তি ৪৪ জনের নমুনায়। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৫৫ জন। এই একদিনে হাসপাতাল ছেড়েছেন ৪০ জন।

এর আগে সোমবার (২৬ জুলাই) রাজশাহী মেডিকেল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল ল্যাবে ২৪০ জনের নমুনা পরীক্ষা হয়েছে। এর মধ্যে করোনা ধরা পড়েছে ৬৮ জনের নমুনায়। 

একই দিনে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ ল্যাবে নমুনা পরীক্ষা হয়েছে আরও ৪৪৭ জনের। এর মধ্যে করোনা শনাক্ত হয়েছে ১৩০ জনের। পরীক্ষার অনুপাতে রাজশাহীর ২২ দশমিক ৫২শতাংশ এবং নাটোরের ৩৮ দশমিক ৩২ শতাংশ নমুনায় করোনা শনাক্ত হয়েছে।