যুক্তরাষ্টের পর দ. আফ্রিকা, ইইউতে স্থগিত জনসনের টিকা - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

যুক্তরাষ্টের পর দ. আফ্রিকা, ইইউতে স্থগিত জনসনের টিকা


 টিকা নেয়ার পর রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার কয়েকটি ঘটনা ঘটায় যুক্তরাষ্ট্র, দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইউরোপীয় ইউনিয়নে গণটিকাদান কর্মসূচিতে জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের করোনা টিকার ব্যবহার স্থগিত করা হয়েছে। বিবিসি সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রে এই টিকা নেওয়ার পর এখন পর্যন্ত মোট ৬ জন রক্ত জমাট বাঁধার শিকার হয়েছেন।


যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ) জানিয়েছে, জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নেওয়ার পর এ পর্যন্ত দেশটিতে মোট ছয়জন রক্ত জমাট বাঁধার শিকার হয়েছেন। আক্রান্তরা সবাই নারী এবং তাদের বয়স আঠারো থেকে আটচল্লিশের মধ্যে।


বর্তমানে তারা সবাই হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আক্রান্তদের মধ্যে একজন ইতোমধ্যে মারা গেছেন, আরেকজনের অবস্থা গুরুতর।

গত ২৭ ফেব্রুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রে জরুরি প্রয়োজনে ব্যবহারের জন্য জনসন অ্যান্ড জনসনের এক ডোজের করোনা টিকার অনুমোদন দেয় এফডিএ। এর আগে ফাইজার এবং মডার্নার করোনা টিকার অনুমোদন দিয়েছিল দেশটি।


গত ডিসেম্বর থেকে যুক্তরাষ্ট্রে শুরু হয়েছে গণটিকাদান কর্মসূচি। এ কর্মসূচিতে মূলত ব্যবহার হয়েছে ফাইজার এবং মডার্নার করোনা টিকা; জনসনের টিকা ব্যবহার করা হয়েছে অনেক কম। যুক্তরাষ্ট্রের স্বাস্থ্য বিভাগ জানিয়েছে, দেশের মাত্র ৩ শতাংশ মানুষকে এই টিকা দেওয়া হয়েছে।


মঙ্গলবার একটি যৌথ বিবৃতি দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা সিডিসি (সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন) এবং এফডিএ। বিবৃতিতে বলা হয়েছে, জনসনের টিকা নেওয়ার পর যুক্তরাষ্ট্রে যারা রক্ত জমাট বাঁধার শিকার হয়েছেন, তাদের এই সমস্যাটিকে চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় সেরেব্রাল ভেনাস সাইনাস থ্রম্বসিস (সিভিএসটি)।


সিভিএসটিতে আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসা সাধারণ রক্ত জমাট বাঁধা রোগীদের চেয়ে অনেকটাই আলাদা। সাধারণ রোগীদের চিকিৎসায় যে ওষুধ ব্যবহার করা হয়, সিভিএসটিতে আক্রান্তদের ক্ষেত্রে সেই ওষুধ প্রয়োগ করা হলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে।


যৌথ বিবৃতিতে সংস্থা দুটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, ‘জনসন অ্যান্ড জনসনের টিকা নেওয়ার পর যে বিরল এবং গুরুতর ধরনের রক্ত জমাট বাঁধা সমস্যা দেখা দিয়েছে, সে বিষয়ক যাবতীয় তথ্য পর্যালোচনা করা হচ্ছে। অতিরিক্ত সতর্কতামূলক পদক্ষেপ হিসেবে অস্থায়ীভাবে যুক্তরাষ্ট্রে এই টিকার ব্যবহার স্থগিত করা হলো।’


জনসনের টিকা নেওয়ার কারণেই এই সমস্যা দেখা দিয়েছে কি না জানতে চাইলে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ ডা. অ্যান্থনি ফাউসি বলেন, ‘এ বিষয়ে এখনও মন্তব্য করার সময় আসেনি।’


দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জুয়েলি এমখিজ জনসনের টিকা স্থগিতের বিষয়ে মঙ্গলবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘রক্ত জমাট বাঁধার কারণ সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য ব্যাখ্যা পাওয়ার আগ পর্যন্ত দক্ষিণ আফ্রিকায় এই টিকার ব্যবহার স্থগিত থাকবে।’


এদিকে জনসন অ্যান্ড জনসন কর্তৃপক্ষ বলেছে, রক্ত জমাট বাঁধার সঙ্গে টিকার কোরো সম্পর্ক নেই। মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে কোম্পানির পক্ষ থেকে বলা হয়, ‘আমরা উদ্ভুত এই সমস্যাটির বিষয়ে সম্পূর্ণ সচেতন। এখন পর্যন্ত বিশ্বজুড়ে মোট ৬৮ লাখ মানুষ আমাদের টিকা নিয়েছেন, তাদের মধ্যে আক্রান্ত হলেন ছয়জন।’


‘উপস্থিত মুহূর্তে আমরা বলতে পারি, রক্ত জমাট বাঁধা সমস্যার সঙ্গে এই টিকার সরাসরি কোনো সংযোগ নেই।’

যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানি হলেও জনসন অ্যান্ড জনসনের করোনা টিকা তৈরির কাজটি হয়েছে কোম্পানিটির বেলজিয়াম শাখায়। অন্যান্য করোনা টিকার তুলনায় এর সুবিধাজনক দিক দুটি— এটি এক ডোজের করোনা টিকা এবং সাধারণ রেফ্রিজারেটরে এই টিকা সংরক্ষণ করা সম্ভব।


সূত্র: বিবিসি


কোন মন্তব্য নেই