ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতেও কিস্তির টাকা তুলছেন এনজিও কর্মীরা
দেশে চলমান ভয়াবহ বন্যা পরিস্থিতির মাঝেই বন্যার্ত মানুষদের কাছে থেকে জোরপূর্বক কিস্তি আদায় করেছে এনজিও গুলো। সরকারের পক্ষ থেকে দুর্যোগকালীন সময়ে ঋণ কার্যক্রম বন্ধ রাখার পরামর্শ দেয়া হলেও তারা তা মানছে না। বুধবার কুড়িগ্রামের ভেরভেরী বাঁধে এমন চিত্র ধরা পড়ে।
সেখানে নদীর আশপাশের বাড়িগুলোতে প্রায় কোমর পর্যন্ত পানি। সেজন্য বাড়িঘর ছেড়ে লোকজন বাঁধে আশ্রয় নিয়েছেন। এমন অবস্থাতেই একটি এনজিও’র একজন মাঠকর্মী কিস্তির টাকা তুলছেন। এ সময় এজিওটির ঋণ গ্রহীতারা কিস্তির টাকা পরে দেয়ার কথা বললে, কিস্তি না নিয়ে যাবেন না বলে জানিয়ে দেন ওই মাঠকর্মী।
এনজিওটির নারী সদস্য আর্জিনা জানান, তাদের ‘ময়না’ নামের ২৪ জনের একটি গ্রুপ আছে। যাদের অনেকেই পানিবন্দি হওয়ার কারণে কাজকর্ম না থাকায় টাকা দিতে পারছেন না। কিন্তু তিনি (মাঠকর্মী) সে কথা কানেই তুলছেন না।
গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিসের স্ত্রী জোসনা জানান, তার স্বামী কুমিল্লায় রাস্তার কার্পেটিংয়ের কাজ করার জন্য গেছেন। কিন্তু তারও কোনো কামাই নেই। ধার করে বিকাশে ৫শ টাকা পাঠিয়েছে, সে টাকা দিয়ে কিস্তি দেন তিনি।
সেখানকার চায়ের দোকানদার এলাহী বক্স জানান, বন্যার কারণে দোকানে বিক্রি নাই। কিন্ত এরা তো মানুষের সুখ-দুঃখ বোঝে না। টাকা যেখান থেকে পারো আনতে বলে।
বন্যা পরিস্তথতিতে কিস্তির টাকা তুলছিলেন এনজিও আশা’র সিনিয়র লোন অফিসার বনি আমিন।
বন্যার সময়ে কিস্তি না তোলার বিষয়টি উল্লেখ করলে বনি আমিন বলেন, ‘অফিসের আদেশে এসেছি। কোনো চাপ দেয়া হচ্ছে না। আপনারা আমাদের ম্যানেজারের সঙ্গে কথা বলেন। আমি তার নির্দেশে এসেছি।’
এ বিষয়ে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক হাফিজুর রহমান জানান, এখানে বেশ কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঋণ কার্যক্রম পরিচালনা করছে। তাদেরকে বন্যাকালীন সময়ে কার্যক্রম বন্ধ রাখার জন্য বলা হয়েছে। কিন্তু তারা যদি মানুষের দুর্ভোগের মধ্যে এমন কাজ করে তাহলে প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।
কোন মন্তব্য নেই