প্যান্ডোরা পেপারসে শচীন টেন্ডুলকর, স্ত্রী ও শ্বশুরের নাম
এতে এই কোম্পানির মালিকরা কি রকম আর্থিক সুবিধা ভোগ করেন, তা সহ রয়েছে বিস্তারিত। কোম্পানির অর্থ তরলীকৃত করার সময় এর শেয়ার মালিকদের মধ্যে বণ্টন হয়েছিল এভাবে:
১. শচীন টেন্ডুলকর। শেয়ার সংখ্যা ৯টি। শেয়ারের মূল্য ৮ কোটি ৫৬ লাখ ৭০২ ডলার।
২. অঞ্জলি টেন্ডুলকর। শেয়ার সংখ্যা ১৪টি। শেয়ারের মূল্য ১৩ লাখ ৭৫ হাজার ৭১৪ ডলার।
৩. আনন্দ মেহতা। শেয়ারের সংখ্যা ৫টি। শেয়ারের মূল্য ৪ লাখ ৫৩ হাজার ৮২ ডলার।
ফলে সাস ইন্টারন্যাশনালে গড়ে শেয়ারের মূল্য ছিল প্রায় ৯৬ হাজার ডলার। ২০০৭ সালের ১০ই আগস্ট কোম্পানি গড়ে তোলা হয়েছিল। ওই সময়ের কোম্পানির এক রেজ্যুলুশন অনুযায়ী কোম্পানির ৯০টি শেয়ার ইস্যু করা হয়েছিল। এর মধ্যে প্রথম ৬০টি শেয়ার সার্টিফিকেট নিয়ে নেন অঞ্জলি টেন্ডুলকর। বাকি ৩০টি শেয়ার নিয়ে নেন তার পিতা আনন্দ মেহতা। আর কোনো শেয়ার বিক্রির জন্য রাখা হয়নি। ফলে এই ৯০টি শেয়ারের মূল্য ধরা হয় ৮৬ লাখ ডলার। যা কিনা ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ৬০ কোটি রুপি। সাস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের এই অর্থ তরলীকরণের ঘটনা ঘটে এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ে। পানামা পেপারস তখন প্রকাশ হয়েছে। এর ঠিক তিন মাস পরেই এই ঘটনা ঘটে। অ্যালকোগ্যালের তদন্তে দেখা গেছে, শচীন টেন্ডুলকর ও অঞ্জলি টেন্ডুলকর নিজেদেরকে ‘পলিটিক্যালি এক্সপোজড পারসন’ (পিইপি) হিসেবে শ্রেণিভুক্ত করেছেন। পিইপির একটি রেজিস্ট্রিতে শচীন টেন্ডুলকর নিজেকে একজন এমপি বলে একটি একাউন্ট দেখিয়েছেন। এর মধ্য দিয়ে তিনি নিজেকে ‘উচ্চ ঝুঁকিতে’ থাকা ক্যাটেগরিভুক্ত হন। শচীন ও অঞ্জলি টেন্ডুলকরের পিইপি মর্যাদা ২০১৬ সালের মে মাসে আবার পর্যালোচনা করা হয়। এটা ঘটে সাস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড শুরুর দুই মাস আগে।
উল্লেখ্য, ২০১২ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত রাজ্যসভার মনোনীত সদস্য ছিলেন শচীন টেন্ডুলকর। এই চার বছর সময়ে তার বিভিআই নিবন্ধিত হয়েছে। রেজ্যুলুশন অনুযায়ী রাজ্যসভায় মনোনীত সদস্যকে তার বার্ষিক সম্পদ ও অন্যান্য বিষয় নির্বাচিত অন্য এমপিদের মতো জমা দেয়ার প্রয়োজন পড়ে না। সাস ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের ডাটা অনুযায়ী, এটি একটি শেয়ারভিত্তিক লিমিটেড কোম্পানি। তারা ৫০ হাজার শেয়ার ইস্যু করেছে, যার প্রতিটির মূল্য এক ডলার। সেলার লিমিটেড নামে আরেকটি কোম্পানিকে এর সেক্রেটারি হিসেবে নিয়োগ করা হয়। অর্থ তরলীকরণের সময় পানামার জন বি ফস্টার নামে একজনকে কোম্পানির ‘ভলান্টারি লিকুইডেটর’ হিসেবে নিয়োগ করা হয়। কোম্পানিটি বিলুপ্তির তারিখ দেয়া হয়েছে ২০১৬ সালের ৩১ শে আগস্ট। এ বিষয়ক রেজ্যুলুশনে স্বাক্ষর করেছেন তিন শেয়ার হোল্ডার- শচীন টেন্ডুলকর, অঞ্জলি টেন্ডুলকর ও আনন্দ মেহতা।
এ বিষয়ে যোগাযোগ করা হলে শচীন টেন্ডুলকর ফাউন্ডেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিচালক মৃন্ময় মুখার্জী বলেছেন, লিবারেলাইজড রেমিট্যান্স স্কিমের (এলআরএস) অধীনে কর দেয়া তহবিল থেকে এসব বিনিয়োগ করেছিলেন টেন্ডুলকর। এসব বিষয় তিনি তার আয়কর রিটার্নে উল্লেখ করেছেন।
কোন মন্তব্য নেই