পুনরায় বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী ভারত-ইইউ - TIMES EXPRESS | টাইমস এক্সপ্রেস is an interactive news portal

নিউজ ফাস্ট

পুনরায় বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে আগ্রহী ভারত-ইইউ


দীর্ঘ আট বছর ধরে বন্ধ রয়েছে ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) মধ্যকার বাণিজ্য আলোচনা। স্থগিত সেই বাণিজ্য আলোচনা শুরু করতে আবারো সম্মত হয়েছে দুই পক্ষ। সম্প্রতি ভার্চুয়ালি অনুষ্ঠিত শীর্ষ সম্মেলনে চীনকে মোকাবেলায় যৌথ অবকাঠামো প্রকল্পে তারা একত্রে কাজ করার বিষয়ে একমত হয়েছে। মূলত চীন নিয়ে উদ্বেগ ব্রাসেলস ও নয়াদিল্লিকে আরো কাছে এনেছে। ভারতে কভিড-১৯ বিপর্যয় সামনে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ও ইইউর ২৭ নেতা একত্র হয়েছিলেন। এর মাধ্যমে ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল নিয়ে ইইউ দীর্ঘদিন পর পুনরায় আগ্রহ দেখাল। খবর রয়টার্স।


এবারের শীর্ষ সম্মেলন ছিল অন্যবারের চেয়ে বেশ আলাদা। বিগত ইইউ-ভারত শীর্ষ সম্মেলনগুলোয় কেবল ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবং ইইউর প্রধান নির্বাহী ও চেয়ারম্যানরা থাকতেন। তবে এবার ইইউর সদস্য দেশগুলোর শীর্ষ নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। আলোচনার পর ইইউ ও ভারতের নেতারা বলেছেন, আমরা একটি বাণিজ্য চুক্তির জন্য পুনরায় আলোচনা শুরু করতে সম্মত হয়েছি, যা বর্তমান চ্যালেঞ্জগুলো সমাধান করবে। এ আলোচনা সফল হওয়ার জন্য উভয় পক্ষকেই বাজারে প্রবেশাধিকার নিয়ে বিদ্যমান সমস্যাগুলো সমাধান করতে হবে।


ইইউ ও ভারত পৃথক বিনিয়োগ সুরক্ষা চুক্তি এবং ভৌগোলিক পণ্য উৎপাদনের বিষয়গুলো নিয়ে সমান্তরালভাবে আলোচনা শুরু করবে। চীন আদর্শ বাণিজ্য অংশীদার থেকে ক্রমবর্ধমান সামরিক উপস্থিতিসহ একটি শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী শক্তি হয়ে উঠেছে। এটা ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পশ্চিমা ও তার মিত্রদের জন্য আতঙ্কজনক পরিবেশ তৈরি করেছে। এমন পরিস্থিতিতে এখানে এখন ব্রাসেলসও প্রভাব বাড়িয়ে তুলতে চায়।


যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, বিশ্বের দুটি বৃহত্তম গণতন্ত্র হিসেবে আমরা একমত হয়েছি ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও ভারতের একটি সাধারণ আগ্রহ রয়েছে। বিশেষ করে এ সহায়তামূলক বিশ্বে সুরক্ষা, সমৃদ্ধি ও টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত করা দুই পক্ষের জন্যই আগ্রহের বিষয়।


এর আগে ২০১৩ সালে শুল্ক হ্রাস, পেটেন্ট সুরক্ষা, তথ্য নিরাপত্তা ও ইউরোপে ভারতীয় পেশাদরদের কাজ করার অধিকারসহ কিছু বিষয় নিয়ে মতভেদের কারণে ইইউ-ভারত বাণিজ্য আলোচনা থমকে গিয়েছিল।


এ সম্মেলন ঘিরে ভিন্ন মত পোষণকারীদের প্রতি মোদি সরকারের দমন ও নিপীড়নমূলক পদক্ষেপ নিয়ে ইইউর নেতারা চাপের মুখে ছিলেন। পর্তুগালের পোর্তোয় ইইউ শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠানের বাইরে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ সাধারণ নাগরিকরা মোমবাতি নিয়ে ভারতের এমন মনোভাবের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। যৌথ বিবৃতিতেও বিষয়টি উঠে এসেছে। সেখানে বলা হয়েছে, লিঙ্গসমতা ও সব ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নসহ মানবাধিকার রক্ষা ও প্রচারের প্রতি আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি। আমরা মানবাধিকার প্রচারের জন্য সুনির্দিষ্ট প্রক্রিয়া ও জাতীয় মানবাধিকার সংস্থা, নাগরিক সমাজ নিয়ে কাজ করা প্রতিষ্ঠান এবং সাংবাদিকদের ভূমিকা শক্তিশালীকরণের গুরুত্বকে স্বীকৃতি দিয়েছি।


ইউরোপীয় পার্লামেন্টের ২০২০ সালের সমীক্ষায় ভারতের সঙ্গে ইইউর একটি বাণিজ্য চুক্তির সুবিধার হিসাব করা হয়েছিল ৮৫০ কোটি ইউরো। যদিও এ অনুমান ব্লক থেকে যুক্তরাজ্য বেরিয়ে যাওয়ার আগের।


এ সম্মেলনে ইইউ ও ভারত বিশ্বজুড়ে যৌথ অবকাঠামো প্রকল্প গড়ে তোলার বিষয়েও সম্মত হয়েছে। এগুলোকে সংযোগ অংশীদারিত্ব হিসেবে বর্ণনা করা হবে। এ চুক্তি ইইউ ও জাপানের মধ্যে ২০১৯ সালে স্বাক্ষরিত চুক্তির মতো চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের বিকল্প সন্ধান করবে। পাশাপাশি উভয় পক্ষই জলবায়ু পরিবর্তনকে সীমাবদ্ধ করতে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, ইইউ ও ভারত নবায়নযোগ্য জ্বালানি, জ্বালানি সঞ্চয়ের প্রযুক্তি এবং বিদ্যুৎ গ্রিড আধুনিকায়নে সহযোগিতা করার জন্য বৈঠক করবে।

কোন মন্তব্য নেই