আবাসিক এলাকাই ওষুধ কারখানা । প্রায়শই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা, আশঙ্কা রয়েছে দুষণের ও।
রাজশাহী নগরীর টিকাপাড়া এলাকার প্রধান সড়কের ধারে কেমিকো ফার্মাসিউটিক্যালস লি: এর বিশাল কারখানা। কারখানাটির আশেপাশের পুরো এলাকা জুড়ে শুধুই আবাসিক বাড়ি। মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ১১টায় এই ওষুধ কারখানার জেনারেটর রুমে আগুন লাগলে পুরো এলাকা কালো ধোঁয়ার কুন্ডলীতে ছেয়ে যায়। সেই সাথে কারখনাটির প্রবেশ দ্বারে দাওদাও করে আগুন জ¦লতে দেখা যায়। এসময় এলাকাবাসীর মনে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়লে আশপাশের বাড়ির মানুষ নিজ বাড়ি ছেড়ে রাস্তায় নেমে পড়ে।
খবর দিলে প্রায় আধা ঘন্টা পর দমকল বাহিনীর তিনটি ইউনিট এসে দীর্ঘ এক ঘন্টার পরিশ্রমে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। পরে দমকল বাহিনীর সদস্যরা জানায় জেনারেটর রুমের প্যানেল বোর্ডে শক সার্কিট হয়ে ট্রান্সফরমার বাস্ট হলে এই আগুনের সূত্রপাত ঘটে। এই প্যানেল বোর্ডসহ ট্রান্সফরমারে কিছু দাহ্য পাদার্থ থাকায় আগুনের স্থায়ীত্ব বৃদ্ধি পায়। ট্রান্সফরমারের ক্ষয়ক্ষতি হলেও সময় মতো আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে পারায় জেনারেটরসহ কারখানাটি অক্ষত রয়েছে বলে জানায় দমকল বাহিনী। এদিকে কেমিকো ওষুধ কারখানাটির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছে আগুন লাগার খবর পাওয়ার সাথে সাথে কারখানায় থাকা সকল কর্মীকে বের করে দেয়া হয়। ফলে কারও কোন ক্ষয় ক্ষতি হয়নি। তবে আগুনে কী পরিমাণ ক্ষয়-ক্ষতি হয়েছে তা এখনই বলা যাচ্ছে না বেলও জানিয়েছে ঔষুধ কারখানা সংশ্লিষ্টরা।
এদিকে কারখানর আগুন নিয়ন্ত্রণে দমকল বাহিনীকে সহযোগীতা করে স্থানীয় জনগন। পরে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসলে জননিরাপত্তার স্বার্থে কারখানাটি স্থানান্তরের দাবি জানালে এলকাবাসীর সাথে কারাখানা সংশ্লিষ্টদের কথা কাটাকাটি লাগে। এসময় স্থানটিতে থানা বোয়ালিয়া থানা পুলিশ স্থানীয় জনগণকে সরিয়ে দিয়ে কারখানার গেট বন্ধ করে দেয়। পরে এলাকাবাসীর সাথে কথা হলে তারা অভিযোগ করে জানান, ওষুধ কারখানায় অহরহই দুর্ঘটনার খবর পাওয়া যায়। এলাকাটি আবাসিক হওয়ায় স্থানীয়দের সবসমই আতঙ্কে থাকতে হয়। সেই সাথে কারখানার কেমিকেলের দুর্গন্ধে এলাকায় টেকা মুশকিল হয়ে পড়ে স্থানীয়দের। এসময় এলাকাবাসী কারখানাটি বিসিক শিল্প নগরীতে স্থানান্তরের দাবি জানায়।
এলাকার বাসিন্দা সজিব বলেন, এখানে এই ঔষুধ কারখানা দীর্ঘ দিন থেকেই রয়েছে। আবাসিকে এধরণের কারখানা স্থাপন বেআইনি বলেই আমরা জানি। কারখানার কেমিকেলের দুর্গন্ধে এলাকায় বাস করা কষ্টকর। এছাড়া তাদেন কারখানার কেমিকেল মিশ্রিত পানি সিটি কর্পোরেশনের ড্রেনের সাথে সংযোক করা আছে। এখান দিনে নানা রংয়ের পানি বের হতে দেখা যায়। যা থেকে নগরীতে রোগ-জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে। নগরীতে এত বড় বিসিক শিল্প এলাকা রয়েছে। এই কারখানাটি দ্রুত সময়ের মধ্যেই সেখানে স্থানান্তর করা উচিত। আসলাম নামের আরেক বাসিন্দা বলেন, গেল ঝড়ো মৌসুমে কারখানা উপরের একটি ভবনের দেয়াল এমনিতেই ধসে পড়ে। এসময় দেয়াল ধসের সেই ইট-পাটকেল রাস্তায় এসে পড়ে। তিনি আরও জানান কারখানায় এর আগেও আগুন লাগার ঘটনা ঘটেছে।
ঔষুধ কারখানাটির দেয়া তথ্য মতে, এখানে এন্টিবায়োটিকসহ শতাধিক ঔষুধ তৈরি করা হয়। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক প্রতিষ্ঠানটির এক কর্মকর্তা স্থানীয়দের অভিযোগ অস্বীকার করে জানায়, এখানে যা করা হচ্ছে তার সবই আইন মেনে। এছাড়া দুর্ঘটনা প্রতিরোধে সবধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থাই নেয়া রয়েছে। কারখানার বদৌলতে এখানে অনেকের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থাও হয়েছে।
কোন মন্তব্য নেই